পেকুয়া প্রতিনিধি:
পেকুয়ায় কবির আহমদ চৌধুরী বাজারে সাথী ফ্যাশন নামের একটি ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোরে দুর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হয়েছে। গত শনিবার দিবাগত গভীর রাতে এ চুরি সংঘটিত হয়। এ সময় নগদ টাকা ও মালামালসহ প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকা লুট হয়েছে বলে মালিক জানিয়েছে। খবর পেয়ে বাজার বণিক সমিতির কর্তারা পরদিন সকালে ওই স্থান পরিদর্শন করেছেন। সাথী ফ্যাশনের মালিক মাওলানা এম,এ রহিম জানায়, ওই দিন রাতে দোকান বন্ধ করে তারা বাসায় চলে যান। সকালে দোকানে এসে চুরির বিষয়টি প্রত্যক্ষ করলাম। রাতে দ্বিতীয় তলার সিড়ি বেয়ে নিচে এসে তলা কেটে তারা দোকানে ঢুকেন। এ সময় মূল্যবান মালামাল ও নগদ ১ লক্ষ টাকারও বেশীসহ প্রায় ৩ লক্ষ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।
################
পেকুয়ায় ভগ্নিপতির হামলায় আহত-১
পেকুয়া প্রতিনিধি:
পেকুয়ায় ভগ্নিপতির ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ১ নারী গুরুতর জখম হয়েছে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত বুধবার ১৮ অক্টোবর দিবাগত রাত সাড়ে বারটার দিকে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের উলুদিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জখমী নারীর নাম মনোয়ারা বেগম (৪২)। তিনি ওই এলাকার মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার অবস্থা গুরুতর বলে চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন। তার ডান পায়ে মারাত্মক জখম করা হয়েছে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পায়ের গোড়ালিতে হাড় দ্বিখন্ডিত হয়েছে। চমেক হাসপাতালের অর্থোপেডিকস বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হওয়ায় ভিকটিম হাসপাতালের ২৬ নং ওয়ার্ডের ১৯ নং শয্যাতে কঠিন মানবেতর দিনাতিপাত করছেন। ঘটনার জের ধরে এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, টাকা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী মনোয়াার বেগম ও মগনামা ইউনিয়নের শরতঘোনা এলাকার জাফর আহমদের ছেলে নবী হোসেনের মধ্যে বিরোধ চলছিল। জানা গেছে, নবীর হোসেনের স্ত্রী মোহছেনা বেগম ও মনোয়ারা বেগম আপন বোন। ছোট বোনের স্বামী নবী হোসেন সাগরপথে মালয়েশিয়ায় যান। সেখানে জিম্মীদশায় পড়েন নবীর হোসেন। মুক্তিপন দেওয়া না হলে নিশ্চিত মেরে ফেলার মত কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয় তাকে। বোনের স্বামীকে উদ্ধার করতে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা ধার দেন মনোয়ারা। পাওনা টাকা নিয়ে ভগ্নিপতি ও ছোটবোনের সাথে মনোয়ারার বনিবনা চলছিল। এরই মধ্যে নবী হোসেন দেশে ফিরেন। টাকা উদ্ধার নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়। এ নিয়ে সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি সিআর মামলা রুজু করা হয়। যার নং ১৭০/১৭। ওই মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়। পৃথক ওয়ারেন্ট নং ১০৮৫ ও ১০৮৬। তাং ৮-১০-১৭। এ দিকে এ খবর জানাজানি হয়। ঘটনার দিন রাতে নবী হোসেন ভাড়াটে লোকজন নিয়ে রাজাখালীর উলুদিয়া পাড়ায় মনোয়ারার বসতবাড়িতে হানা দেয়। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে উত্তেজিত লোকজন মনোয়ারাকে কুপিয়ে জখম করে। মনোয়ারার ছেলে শফিউল আলম জানায়, আমরা তিন ভাই সিএনজি চালায়। রাতে বাড়িতে ছিলাম না। তারা নিষ্টুরভাবে কুপিয়ে মাকে জখম করে। আমি রাত তিনটার দিকে মাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। পুত্রবধূ শারমিন আক্তার জানায়, আমরা দুই বউ বাড়িতে ছিলাম। রুমা আক্তার নামের ছেলের বউ বাকপ্রতিবন্ধী। তারা আমাদের উপরও নির্যাতনের চেষ্টা করছিল। পালিয়ে গিয়েছিলাম। রবি আলম, আবদুল মাবুদ, জিয়াউর রহমান, আহমদ ছবিসহ স্থানীয়রা জানায়, রাতে ভিন্ন এলাকা থেকে এসে এ মহিলাকে কুপিয়ে জখম করেছে। আমরা বেরিয়ে না আসলে তারা আরো অধিক হিং¯্রাত্মক হতেন। মনোয়ারা বেগমের অবস্থা নিরুপন করতে গত শনিবার ২১ অক্টোবর চট্রগ্রাম মেডিকেল হাসপাতাল পরিদর্শন করা হয়। সেখানে এ প্রতিবেদকের সাথে তার সরাসরি কথা হয়। এ সময় ওই মহিলাকে হাসপাতালের ৫ম তলায় ২৬ নং ওয়ার্ডে ১৯ নং শয্যায় মারাত্মক যন্ত্রনায় চটপট করতে দেখা গেছে। শয্যাপাশে তার ছোট্ট দুই নাতনী সেবা শশ্রুষা করছিলেন। দাদীর চোখের জলে বালিশ ভিজে গেছে। সে দিনের হামলা ও জখমী বিবরন দিতে গিয়ে অজোর নয়নে কাঁদেন অসহায় এ নারী। তার চোখের জলে শিশু দুই নাতনীও ধরে রাখতে পারেননি চোখের জল। চিকিৎসা পর্যবেক্ষনে দেখা গেছে চমেক হাসপাতালের অর্থোপেডিকস বিভাগের ৬ চিকিৎসক সার্বক্ষনিক তাকে পর্যবেক্ষনে রাখছেন। ডাক্তার মুহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, মুহাম্মদ হোসাইন, চন্দন কুমার দাশ, মিজানুর রহমান, জাবেদ জাহাঙ্গীরসহ চিকিৎসকরা এ ভিকটিমকে চিকিৎসায় দেখভাল করছেন।
পাঠকের মতামত: